সকল মেনু

ফিলিপিন্সে যাওয়া অর্থের ৫৬% ব্যয় ক্যাসিনোতে

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি যাওয়া যে টাকা ফিলিপিন্স ব্যাংকে গেছে, তার বড় একটি অংশ দেশটির ক্যাসিনো শিল্পে ঢুকেছে। এ পরিমাণ ৪৬ মিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছে ফিলিপিন্স অ্যামিউজমেন্ট গেমলিং করপোরেশন (পেগকর)।

ক্যাসিনো তদারকিতে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি জানিয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা আসার পর পরই দু’জায়গায় তা দ্রুত স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গেছে সোলারি রেসোট অ্যান্ড ক্যাসিনোতে এবং বাকি ২০ মিলিয়ন ডলার গেছে ইস্টার হাওয়াই ক্যাসিনো অ্যান্ড রেসোটে।

ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে  ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থানান্তর করে চোরেরা। ওই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া টাকার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

ক্যাসিনোতে খরচ হওয়া টাকা ফিলিপিন্সে পাঠানো অর্থের ৫৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে তদারকিতে নিয়োজিত সংস্থা পেগকো। বাকি ৪৪ শতাংশ অর্থের গতিপথ সম্পর্কে কোনো তথ্য তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন পেগকোর একজন কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ম্যানিলা থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক ইনকোয়ারার।

উল্লেখ্য, ম্যানিলাভিত্তিক ইংরেজি এ দৈনিক গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকারদের টাকা চুরি নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফিলিপিন্স সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ওই পত্রিকার বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোপাটের কথা স্বীকার করে।

ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকের ৫টি অ্যাকাউন্টে এ টাকা পাঠানো হয় গেল ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে।

পেগকোর কর্মকর্তা আরও জানান, অ্যান্টি মানি-লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) আবেদন জানালে আদালত ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ১ মার্চ এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এর আগ পর্যন্ত বিদেশ থেকে আসা এ টাকা লেনদেন হচ্ছিল ক্যাসিনো টেবিলে। সবই চলছিল স্বাভাবিক নিয়মে। গোল বাধে দ্য ইনকোয়ারারের প্রতিবেদন প্রকাশের পর।

এ পর্যন্ত ফিলিপিন্সে আসা চুরি যাওয়া কত টাকা এএমএলসি উদ্ধার করতে পেরেছে কিংবা উদ্ধার করতে পারলে সে টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি-না সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। সংবাদ মাধ্যমের অনুরোধ সত্ত্বেও এ বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা জানিয়েছে এএমএলসি কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন ছয়জনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ফিলিপিন্সের মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, শালিকা  ফাউন্ডেশন নামে শ্রীলঙ্কার একটি এনজিওর ডয়চে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল ২ কোটি ডলার। সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্টের অর্থ সরানো হয় শ্রীলঙ্কার ব্যাংকেও।

কিন্তু পেমেন্ট অর্ডারে ‘foundation’ এর জায়গায় লেখা হয়েছিল ‘fandation’, তাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। তখন টাকা অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর আটকে দেয়া হয়। পরে ওই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top