ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুর্দান্ত আফগানিস্তান। নক আউট হয়ে যাওয়া ম্যাচটিতে জিম্বাবুয়ে তাদের সাথে পারলোই না। এই টেস্ট খেলা দেশটিকে বিদায় করে দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেন বা মূল পর্বে উঠে গেলো আইসিসির সহযোগী দেশ আফগানিস্তান। নাগপুরে প্রথম রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আফগানরা জিতেছে ৫৯ রানে। মূল্যবান ৫২ রান করার পর ১ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ মোহাম্মদ নবি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা ৫ ম্যাচেই জিতলো আফগানিস্তান। দুই দলই গ্রুপে ২টি করে ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার এই লড়াইয়ে নেমেছিল।
টস জিতে ব্যাট করা আফগানিস্তানের ইনিংসে ঝড় উঠেছিল শুরুতে। এরপর নেমেছিল ব্যাটিং ধ্বস। জিম্বাবুয়ের ইনিংস মোটামুটি শুরুর পর ধ্বসের মুখে পড়ে। আফগানরা দুই ব্যাটসম্যানের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিশাল সংগ্রহ পেয়েছিল। কিন্তু ধ্বসের মুখে প্রতিরোধের দেয়াল তুলতে পারেননি জিম্বাবুয়ের কোনো ব্যাটসম্যান। হয়নি কোনো জুটি। তাতেই সর্বনাশ হয়েছে তাদের। ৬ উইকেটে ১৮৬ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। জিম্বাবুয়ে ১৯.৩ ওভারে ১২৭ রানে অল আউট।
বড় রান তাড়া করতে শুরুটা তেমন ঝড়ো দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (১১) সেই চেষ্টাতেই দলের ২৬ রানে বিদায় নেন। এরপর টিনেজার লেগ স্পিনার রাশিদ খান ২ উইকেট নিয়েছেন। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে তারা। শেষ ভরসা ছিলেন সিকান্দার রাজা (১৫)। নব্বুইয়ের ঘরে গিয়ে ৮ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়েছে তারা। ১০০ রানের মধ্যে ৮ উইকেট হারানোর পর আরে কি জেতা যায়! জিম্বাবুয়ের ৭ ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করেছেন। কিন্তু এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭! রাশিদ দারুণ বোলিংয়ে ৪ ওভারে ১১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন। ২ উইকেট হামিদের।
জিম্বাবুয়ে আফগানদের বিপক্ষে এর আগে খেলা ৪ ম্যাচের প্রতিটিতে হেরেছে। এদিন তাদের প্রথমে ডোবালেন মূলত তিন আফগান ব্যাটসম্যান। শুরুতে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শাহজাদ মোহাম্মাদি ২৩ বলে ৪০ রান করেছেন। তারপর নেমেছিল ব্যাটিং ধস। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে আফগানদের নতুন রেকর্ড ৯৮ রানের জুটি গড়েছেন মোহাম্মদ নবি ও সামিউল্লা শেনওয়ারি। নবি ৫২ ও সামি ৪৩ রান করেছেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি আছে ওপেনার শাহজাদের। এদিনও তাণ্ডব শুরু করলেন এই আফগান। তাতে ৪.৪ ওভারেই উঠে এলো ৪৯ রান। অসাধারণ শুরু। কিন্তু স্পিনার শন উইলিয়ামস বিদায় করেছেন ২৩ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করা শাহজাদকে। ওখানে ধসের শুরু। ১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান। এরপর নবি ও সামি প্রতিরোধ গড়ে ইনিংস গড়ার কাজে হাত দেন। আর তাতে দারুণ সফল তারা।
এরপর ১৪ ওভারে ৪ উইকেটে আফগানদের ছিল ৯৮ রান। পরের ৪ ওভারে ৬০ রান তুলে ফেলেন নবি ও সামি। এর মধ্যে স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ওভারটিতে এসেছে ২১ রান। এই ওভারে দুটি ছক্কা মেরেছেন নবি। এরপর পেসার তিনাশে পানিয়াঙ্গারাকে দুটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন সামি। দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণের মুখে পড়ে হাঁসফাঁস করছিল জিম্বাবুয়ে। তবে তিরিপানো তুলে নিতে পারেন সামির উইকেট। ৩৭ বলে মূল্যবান ৪৩ রান করে ফেরেন তিনি। ওই ওভারেও বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৫ রান দেন তিরিপানো।
দারুণ ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটিটা পাওনা হয়ে গিয়েছিল নবির। ৩০ বলে ৫০ রান করেছেন আফগানদের সাবেক অধিনায়ক। ৩২ বলে ৪টি বাউন্ডারি ও ২টি ছক্কায় ৫২ রান করে শেষ ওভারে রান আউট হয়েছেন নবি। তবে তার আগে আফগানদের দিয়েছেন জেতার মতো একটি সংগ্রহ।
জিম্বাবুয়ে দল ভুগেছে বলের নিয়ন্ত্রণহীনতায়। ২০ ওভারের ক্রিকেটে ২৫টি রান অতিরিক্ত খাতে দিলে কি আর হয়! ১৭টি ওয়াইড বল দিয়েছে তারা। পানিয়াঙ্গারা ৪ ওভারে ৩২ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। পরে ব্যাটিংয়ে ভুগেও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে তারা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।