অটিজমসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা মোকাবেলায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তবে সামনে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে আরও আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
এ কথা বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলের সদস্য ও বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। শুক্রবার (১ এপ্রিল) নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বিকেলে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে ‘অটিজম মোকাবেলা: এসডিজির আলোকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কৌশল’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ, ভারত, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া ও অটিজম স্পিকসের যৌথ আয়োজনে এই সেমিনারে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের পত্নী বান সুন-তায়েক, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্টের পক্ষে কাজাখস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি খায়রাত আবদরাখমানব, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবর উদ্দিন, কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি আলিয়া বিনতে আহমেদ আল থানি, দক্ষিণ কোরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ওহ জুন, অটিজম স্পিকস’র কো-ফাউন্ডার সুজানে রাইট প্রমুখ।
সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, অটিজমসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রতিবন্ধিতা মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী ধীরে ধীরে সচেতনতা গড়ে উঠছে। আইন হচ্ছে। কিন্তু আইন করলেই হবে না কেবল; জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে এক্ষেত্রে সচেতনতার সৃষ্টি করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রতিবন্ধিতা মোকাবেলায় ব্যাপক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হচ্ছে জানিয়ে সায়মা ওয়াজেদ বলেন, আমরা জাতীয়ভাবে যে কাজ করছি, এর বাইরে আঞ্চলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় এবং আন্তর্জাতিক পরিসরেও সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময়ে ঢাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়েছে। এরমধ্যে ২০১১ সালে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের কথা উল্লেখযোগ্য।
তিনি উল্লেখ করেন, এই ধরনের সভা-সেমিনারের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তত্ত্বাবধানে অটিজম নিয়ে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হচ্ছে। এরমধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে অন্তত দু’জন করে অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশুকে পড়তে দেওয়ার সুযোগ রাখা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।
সায়মা ওয়াজেদ বলেন, আমাদের দেশের বর্তমান সরকারের প্রত্যেকটি উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভাগ অটিজম বা প্রতিবন্ধিতার ব্যাপারগুলো দেখাশোনা করছে। তারা তাদের কাজ করছে কিনা সে যোগাযোগও রাখা হচ্ছে।
তিনি সেমিনারে জানান, অটিজমসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রতিবন্ধিতা মোকাবেলায় সরকারের এ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১৬-২০২১) আরও বেশ কিছু উদ্যোগ থাকছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বলেন, অনেক গুণগত নেতৃত্বের কারণে অটিজমের মতো ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তবে সামনে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নির্ধারিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে এইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগোতে হবে।
তিনি বলেন, সমাজের প্রতিটি মানুষকে উন্নয়নে অন্তর্ভূক্ত করা ছাড়া এসডিজি অর্জন সম্ভব ন। সেজন্য অটিস্টিকসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রতিবন্ধীদের নিয়েই বিশ্ব সম্প্রদায়কে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।
সেমিনারের পরে প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে অংশ নেন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।