সকল মেনু

দ্বিতীয় শিরোপার লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড

কেনসিংটন ২০১০ সাল ওভালে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম শিরোপা ঘরে তুলেছিলো ইংল্যান্ড। ঠিক এর পরের আসরে ২০১২ সালে কলম্বোয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৬ রানের জয় নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজও প্রথম টি-টোয়েন্টি শিরোপার দেখা পায়। এবারের আসরের ফাইনালে উঠেছে এই দুই দল। তাই দু’লের জন্যই এটি দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের লড়াই।

আর নিজেদের এই দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে রোববার (৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কলকাতার ইডেন গার্ডেনের সবুজ গালিচায় গড়াবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার শিরোপা জয়ের মহারণ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের শুরুটা অনেকটা উড়ন্তই করেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৬ মার্চ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ফাইনালের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে জয়রথ ছুটিয়েছিল ক্যারিবীয়রা। আর স্যামি, গেইলদের এই জয়রথ অব্যাহত ছিল, পরের দুই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও। তবে ২৭ মার্চ নাগপুরে শেষ দশে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৬ রানে হেরে গেলে তাদের সেই জয় রথ থেমে যায়। কিন্তু তাতে ক্যারিবীয় শিবিরের খুব বেশি কিছু এসে যায়নি। কেননা প্রথম তিন ম্যাচে টানা জয়ে ততক্ষণে সেমিফাইনালে উঠে গেছে ২০১২’র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

আর সেমিফাইনালে! বলতে গেলে ইতিহাসই রচনা করে ফেলে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জটি। কেননা, ৩১ মার্চ মুম্বাইয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিরাট কোহলির ব্যাটে উড়তে থাকা স্বাগতিক ভারতকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে আকাশ থেকে মাটিতে টেনে নামায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।  এবার দুর্দান্ত এই দলটির সামনে ইংল্যান্ড।

ইংলিশদের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখামুখি হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে ৯টিতেই জিতেছে তারা আর বাকি ৪টিতে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড।  আর বিশ্বকাপে এই পর্যন্ত চারবারের দেখায় একটিতেও জয় পায়নি ইংল্যান্ড। ফলে ফাইনালের এই ম্যাচে ক্যারিবীয়দেরই ফেভারিট হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

এবারের বিশ্বকাপের পারফরমেন্স আর উল্লেখিত পরিসংখ্যান সব বিবেচনায় ইংলিশদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকা দলটির অধিনায়ক ড্যারেন স্যামিকেও তাই শনিবার (২ এপ্রিল) ইডেনের সম্মেলন কক্ষে প্রি-ফাইনাল সংবাদ সম্মেলনে বেশ উৎফুল্লিত দেখালো। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচেও জয়ের ব্যাপারে প্রায় শতভাগ আশাবাদী হয়ে তিনি জানান, ‘ফাইনালে আমাদের হারাতে হলে ইংল্যান্ডকে অবশ্যই আমাদের গেইল, স্যামুয়েলস, সিমন্স ও আন্দ্রে রাসেলকে আটকাতে হবে। কেননা ওরা একবার সীমানার বাইরে  বল পাঠানো শুরু করলে সেটা ইংলিশ দলের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ওদের বিধ্বংষী ব্যাটিংই আমাদের দলকে দিন শেষে জয় এনে দিয়েছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। এই ম্যাচেও আশা করছি ওদের এমন পারফরমেন্স অব্যাহত থাকবে।’

স্যামিরা যেখানে ইংলিশদের বিপক্ষে জয়ের ব্যাপারে এতটাই আশাবাদী সেখানে পিছিয়ে নেই ইংলিশরাও। কেননা, ক্যারিবীয়দের মতো বিশ্বকাপের এবারের আসরে তারাও কম যায়নি। শেষ দশে নিজেদের চার ম্যাচে একমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া কারও বিপক্ষেই হারেনি ইয়ন মর্গানরা। দলটির ক্ষুরধার ব্যাটিং ও বোলিংয়ের সামনে মাথা নত করেছে টি-টোয়েন্টিতে সব সময়ের শক্তিশালী দুই দল দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অন্য ম্যাচে আইসিসির সহযোগী দেশ আফগানিস্তানও হেরে গেছে তাদের বিপক্ষে।

তবে লক্ষ্য করার বিষয় হলো শেষ দশের চেয়ে দলটির পারফরমেন্স আরও উজ্জ্বল ছিল সেমিফাইনালে। কেননা গেল ৩০ মার্চ দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় গ্রুপ ‘২’ এ শীর্ষ দল নিউজিল্যান্ডকে তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে। তাই ফাইনালের মিশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় প্রত্যাশা করে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তোলার স্বপ্ন নিশ্চয়ই তাদের অবান্তর নয়।

তাইতো ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দলটির অধিনায়ক ইয়ন মর্গান বললেন, আমাদের সেরা খেলাটি খেলেই সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মতো দাপুটে দলকে হারিয়ে ফাইনালে এসেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য ফাইনাল জয়। দলের সবার ফিটনেস লেভেল এখনও পর্যন্ত সন্তোষজনক। ইনজুরির সমস্যা একেবারেই নেই। আশা করছি সবাই এদিন তাদের সেরা খেলাটিই খেলতে পারবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top