সকল মেনু

শাহজালালের ‘নিরাপত্তা ঘাটতি’ দূর করতে ৭৩ কোটি টাকার প্রকল্প

ঢাকা: পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ঘাটতির কারণ দেখিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কার্গো পরিবহনে (বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পণ্য পরিবহন) নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাজ্য। সে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে পরামর্শ ও সেবা প্রদান’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ঘাটতি দূর করতে প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় হবে ৭৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

মোট ব্যয়ের মধ্যে ব্রিটিশ পরামর্শক সেবা প্রতিষ্ঠান রেডলাইন অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি লিমিটেডকে দেওয়া হবে ৪৪ লাখ ৭১ হাজার ৪২ ইউকে পাউন্ড বা ৫০ কোটি ৫২ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৬ টাকা। বাকি ২২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হচ্ছে কিছু যন্ত্র ও যানবাহন। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি জিপ ও দু’টি মাইক্রোবাস কেনা হবে, সেগুলোও ব্যবহার করবেন ব্রিটিশ পরামর্শকেরা।

এ প্রকল্পের আওতায় ব্রিটিশ পরামর্শক নিয়োগের পর নিরাপত্তা নিয়ে আরও কোনো প্রশ্ন তুলছে না দেশটি। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো পরিবহন নিয়ে সংকট কেটে যাবে বলে আশা করছে বিমান মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে ১২ জন ব্রিটিশ পরামর্শক বিমানবন্দরে নিরাপত্তার বিষয়ে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। চলতি সময় থেকে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত রেডলাইনের এ কার্যক্রম চলবে। এ সময়কালে ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ জন ব্রিটিশ পরামর্শক জন মাসওয়ারী কাজ করবেন। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সাড়ে ৫০ কোটি টাকা পর্যায়ক্রমে তাদের পেছনে ব্যয় করা হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ উইং) আবুল হাসনাত মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘বর্তমানে ১২ জন ব্রিটিশ পরামর্শক আমাদের দেশের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। প্রয়োজন অনুসারে এ সংখ্যা বাড়বে-কমবে। আমরা আশা করছি, এর ফলে যুক্তরাজ্য যে নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ছিলো, তা কেটে যাবে’।

মন্ত্রণালয় প্রস্তাব করেছিল, যেকোনো একটি ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের মাধ্যমে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ধাপে ধাপে উন্নত হবে এবং ব্রিটিশদের নিরাপত্তা নিয়ে আর কোনো আপত্তি থাকবে না।

এরপর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে পরামর্শক সেবা গ্রহণে চারটি কোম্পানির তালিকা পাঠায় ব্রিটিশ সরকার। পরে বাংলাদেশ সরকার দেশটির প্রস্তাবিত তথ্য যাচাই-বাছাই করে দু’টি প্রতিষ্ঠানকে নেগোসিয়েশনের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। সবশেষে ধাপে ধাপে ৪৪ লাখ ৭১ হাজার ৪২ ইউকে পাউন্ডের বিনিময়ে রেডলাইনকে পরামর্শক সেবা দিতে নিয়োগ করা হয়।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্রিটিশদের চেয়ে আমাদের দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকাংশে ভালো। তারপরও নিরাপত্তা ঘাটতির কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সরাসরি কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নিরাপত্তার কথা বলে আসলে ব্রিটিশ সরকার আমাদের দেশে পরামর্শক নিয়োগের মাধ্যমে তাদের কিছু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে’।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top