সকল মেনু

হাওরে ত্রাণ কার্যক্রম তদারকিতে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিয়ে প্রশ্ন

হাওর এলাকায় সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি জোরদার ও গণমাধ্যমে তা প্রচারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের পর অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরই উজানের পানি ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা হয় কিন্তু এবার কিছু আগেই তা হলো। জলবায়ু পরিবর্তনের ধারায় এমন হতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সে জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও ত্রাণ তত্পরতা জোরদার করতে হবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সচিব শাহ কামাল, অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নেত্রকোনার বারহাট্টা ও মদন উপজেলা পরিদর্শনে যান। এর আগেই হাওরের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সদস্যরা সুনামগঞ্জে কাজ শুরু করেন। এ কমিটির নেতৃত্বে আছেন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফয়জুর রহমান।

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে সাফ জানিয়েছেন, দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই। মানুষকে যত প্রয়োজন তত খাদ্য দেওয়া হবে। পুনর্বাসনে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তিনি সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম গণমাধ্যমে যথাযথভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করারও নির্দেশনা দেন।              যাতে জনগণ জানতে পারে দুর্গত মানুষের পাশে সরকার আছে। তাদের জন্য সরকার কাজ করছে। যতদিন পর্যন্ত এ অবস্থার উন্নতি না হয়, ততদিন সরকার ত্রাণ কার্যক্রম চালাবে।

গত রবিবার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জানান, বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের সহায়তায় পরবর্তী একশ দিনের জন্য প্রত্যক পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি চাল এবং নগদ ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ৫০ কোটি টাকা ও ৩৫ হাজার টন চাল। পাশাপাশি ওএমএসর মাধ্যমে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল ও ১০ টাকা কেজি দরে ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রি অব্যাহত থাকবে।

হাওরে ক্ষতির পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন : হাওরের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রমতে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাওরে বন্যায় এত মাছ মরেছে, এত ধান নষ্ট হয়েছে কিন্তু এই পরিমাণ কে মেপেছে? কিসের ভিত্তিতে এ ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হলো?

গত রবিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান বলেন, হাওরে বন্যায় এক হাজার ২৭৬ টন মাছ নষ্ট হয়েছে এবং তিন হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ বলেন, বন্যায় দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যেখান থেকে ছয় লাখ টন চাল পাওয়া যেত। তবে এতে আমাদের খাদ্য ঘাটতি হবে না।

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার কমেছে : চলতি বছর প্রথম তিন মাসে মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৪৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এই হার ছিল ৬২ শতাংশের বেশি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ১০টি মন্ত্রিসভা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১০১টি। বাস্তবায়ন করা হয়েছে ৪৭টি। ৫৪টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

জিএসপি পেতে আপস নয় : জিএসপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টতই বলেছেন, আইন অনুযায়ী ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ নেই। আর জিএসপি সুবিধা পাওয়ার জন্য কোনো ক্ষেত্রে আপস করা যাবে না।

মত্স্য সংঘ নিরোধ আইনের খসড়া অনুমোদন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিদেশ থেকে আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছ আমদানি করলে জেল ও জরিমানার বিধান রেখে মত্স্য সংঘ নিরোধ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে দুই বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আইন বাস্তবায়নে একটি কর্তৃপক্ষ থাকবে। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে মাছ আমদানি ও রফতানি নিষিদ্ধ করতে পারবে। বিদেশ থেকে মাছ, পোনা ও রেণু আমদানি করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top