সময়কন্ঠ প্রতিবেদক: কমিটি গঠন করে দ্রুতই দেশের ৮টি বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সফরের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরিস্থিতিতে স্থবির হওয়া সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড সচল করতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী সভায় করোনা পরিস্থিতি, অর্থনীতি, রোহিঙ্গা ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয় বলে বৈঠকসূত্রে জানা গেছে।
সকাল ১০টায় শুরু হওয়া বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ৬ মাস পর অনুষ্ঠিত এ সভায় দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, শাজাহান খান, এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান। সভার শুরুতেই সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতেই সভাপতিমণ্ডলীর প্রয়াত ২ সদস্য এডভোকেট সাহারা খাতুন ও মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। এসময় তাদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, তৃণমূলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের সমন্বয়ে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে টিমওয়ারি সাংগঠনিক সফরের সিদ্ধান্ত হয়। এতে করে করোনায় স্থবির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সচল ও জোরদার করা হবে। সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য জানান, সারাদেশে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারে ৮টি বিভাগীয় কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যরাও থাকবেন। তৃণমূলে এ পর্যন্ত যে সব জেলা ও মহানগর সম্মেলন হয়নি তাদের কমিটি গঠন করতে হবে। তার আগে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলনের কাজ শেষ করতে হবে। এছাড়া যেসব উপজেলা, জেলা, মহানগর এবং সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে তাদের সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে কমিটি গঠন করে জমা দেয়ার কথা থাকলেও অনেকেই জমা দেননি। যারা এখনো জমা দেয়নি তাদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত কমিটি জমা দেয়ার নিদেশ দেয়া হয়েছে। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলার কমিটি করে জেলা সম্মেলন করারও নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে, বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমে বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ের উপকমিটিতে ত্যাগী এবং দুঃসময়ে দলের জন্য যারা ত্যাগ স্বীকার করছেন তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। কমিটি করার সময় কোনোভাবেই স্বজনপ্রীতি দেখানো যাবে না।
বৈঠকসূত্র আরো জানায়, দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখনো ছোটখাটো যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো কিভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় উপস্থিত সবাই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেয়া পদক্ষেপের প্রশংসা ও তাকে অভিনন্দন জানানো হয়। কারণ বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় আমরা কোভিড ম্যানেজমেন্ট খুব ভালোভাবে করেছি। আমরা অনেক ইমপ্রুভমেন্ট করছি। এগুলো আবার করতে হবে। করোনাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। কেননা, এসময় জনগণের সব থেকে কাছে ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ত্রাণ বিতরণ, ধানকাটা, করোনা রোগীদের পাশে থেকে সেবা দেয়া এমনকি করোনায় আক্রান্তদের কবর দেয়ার কাজেও সহযোগিতা করেছেন তারা। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদও জানানো হয়।
ঢাকা মহানগর যুবলীগের কমিটির বিষয়ে সভায় কোনো আলোচনা না হলেও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি দ্রুত গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের অর্থনীতি, খাদ্য, কৃষি, রোহিঙ্গা ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দেশে হঠাৎ করে ফের পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়েও আলোচনা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।