সকল মেনু

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ঋণের কিস্তি আদায় না করার নির্দেশ

প্রতিবেদক : বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর কৃষকদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায় না করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে শস্য বা ফসল, মৎস্য, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে দ্রুততার সঙ্গে নতুন ঋণ বিতরণ করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (৬ জুন) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এই সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাসহ পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় শস্য বা ফসল, মৎস্য, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতের সঙ্গে জড়িত এতদ্বঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমতাবস্থায়, বন্যা কবলিত অঞ্চলের কৃষকদের ক্ষতি মোকাবিলাসহ তাদেরকে কৃষি কাজে সম্পৃক্ত রাখার লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে।

সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আগের দেওয়া ঋণ আদায় ব্যতিরেকে শস্য বা ফসল, মৎস্য, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে দ্রুততার সঙ্গে নতুন ঋণ বিতরণ করতে হবে।

এছাড়া কৃষক বা গ্রাহক পর্যায়ে ৪ শতাংশ সুদ হারে কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য গঠিত ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে ব্যাংকের অব্যবহৃত স্থিতির ন্যূনতম ২০ শতাংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এখন থেকে পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত বর্ণিত জেলাগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছ থেকে কৃষি ঋণ আদায় স্থগিত রাখতে হবে। ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ঋণ প্রাপ্ত কৃষকদের কাছ থেকেও কৃষি ঋণ আদায় একইভাবে ৬ মাস স্থগিত রাখতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলেছে, ডাউন পেমেন্টের শর্ত শিথিলপূর্বক ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ সুবিধা প্রদান করা যাবে। তবে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় বিনা ডাউন পেমেন্টেও ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে। এতদ্ব্যতীত পূর্ব প্রদত্ত ঋণের কিস্তি ওভারডিউ থাকলেও কৃষক/গ্রাহক পর্য়ায়ে নতুন ঋণ সুবিধা প্রদান করতে হবে।

সার্কুলারে বলা হয়, নতুন করে কোনও সার্টিফিকেট মামলা না করে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে অনাদায়ী ঋণ তামাদি হওয়া প্রতিবিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দায়েরকৃত সার্টিফিকেট মামলাগুলোর তাগাদা আপাতত বন্ধ রেখে সোলেনামার মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তিকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বসতবাড়ির আঙিনায় হাঁস-মুরগী ও গবাদী পশু পালন, গো-খাদ্য উৎপাদন ও ক্রয় এবং অন্যান্য আয় উৎসারী কর্মকাণ্ডে ঋণ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে প্রকৃত চাহিদা মোতাবেক যথাসময়ে নতুন ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন এবং ঋণ পেতে কোনও ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টি ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কার্যালয় কর্তৃক নিবিড়ভাবে তদারকি করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট জেলার লিড ব্যাংক কর্তৃক জেলা কৃষি ঋণ কমিটির সভার মাধ্যমে ঋণ বিতরণ পরিস্থিতি তদারকি করতে হবে। এ বিষয়ে গৃহীত কার্যক্রমের অগ্রগতি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top