Thursday , March 28 2024
প্রচ্ছদ / জাতীয় / মোদির আমন্ত্রণে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, সই হবে বেশকিছু স্মারক

মোদির আমন্ত্রণে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, সই হবে বেশকিছু স্মারক

প্রতিবেদক : সর্বশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে নয়াদিল্লি সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘদিন পর আবারও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয়াদিল্লি সফর করবেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে এই সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ থেকে সাতটি স্মারক সই হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর নিয়ে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর উভয়দেশের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। আশা করা হচ্ছে, তার এই সফরের মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে।

এরই মধ্যে উভয়দেশ প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের চূড়ান্ত সময়সূচি এবং সফরসূচি প্রকাশ করেছে। সফরসূচি থেকে জানা যায়, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানাবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, সে সময় তাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেয়া হবে।

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দিল্লি পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাসে ভারতীয় অতিথিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন। দিল্লি সফরের দ্বিতীয় দিন ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার আগে তিনি দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। সফরকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় বেশ কয়েকটি চুক্তি এবং সমঝোতা স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সফরকালে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই দিন বিকেলে আজমীর শরিফে খাজা মঈনুদ্দীন চিশতির মাজার জিয়ারত করবেন তিনি। পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর জয়পুর শহর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

নয়াদিল্লি সফরে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার মধ্যে থাকছেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এ সফরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন। কূটনীতিক সূত্রে জানা যায়, এই সফরে যুগান্তকারী বড় ধরনের কোনো চুক্তি হবে না। তবে এই সফর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কূটনীতিক সূত্রে আরও জানা যায়, চীনের প্রতি বাংলাদেশের ঝুঁকে পড়ার যে প্রবণতার কথা ভারতের কূটনৈতিক মহল থেকে বলা হচ্ছে তা প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে পরিষ্কার করা হবে, তবে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে কথা হলেও তিস্তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরেও কিছু হচ্ছে না৷ কুশিয়ারার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি হতে পারে, গত মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে তা স্পষ্ট হয়েছে।

এছাড়া আগামী বছরের শেষদিকে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে৷ তাই আগামী নির্বাচনের আগে এটাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফর বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দিক দিয়ে শেখ হাসিনার এই ভারত সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষকেরা দেখছেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যে দুই দেশের সরকারই কিছুটা বিব্রত পরিস্থিতিতে রয়েছে বলে জানান কূটনীতিকরা।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক অবশ্যই ভিন্ন গুরুত্ব বহন করে। ভারতের সাথে আমাদের নিয়মিত আলাপ আলোচনা হয়৷ প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে চীন ইস্যু থাকা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনের কারণে রাজনৈতিক বিষয় আলোচনায় থাকবে।