সময়কন্ঠ ডেস্ক :
প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ১১:১৪ এএম
গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনের পর সরকারবিহীন এই সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হলেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া বাংলাদেশের চলমান ঘটনাবলীর দিকে ওয়াশিংটন নজর রাখছে বলেও জানিয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র তার দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বাংলাদেশে চলমান ঘটনাবলীর দিকে নজর রাখছি এবং দেশটিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে লক্ষ্য করেছি। বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রসরমান ঘটনাবলী নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, আমরা মনে করি অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
এদিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র পিটিআইকে বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্তে গণতান্ত্রিক নীতি, আইনের শাসন এবং বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করা উচিত। নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে সম্মত হয়েছেন। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত, কারণ এই সরকার বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
এনডিটিভি বলছে, নোবেল বিজয়ী মোহাম্মদ ইউনুস বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার এবং ‘আমাদের নতুন বিজয়ের’ সর্বোত্তম ব্যবহার করতে ‘সকল প্রকার সহিংসতা থেকে বিরত থাকার’ আন্তরিক আবেদন জানিয়েছেন। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বুধবার ঘোষণা করেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে ১৫ সদস্য থাকতে পারে। এ সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিদ্যমান সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো রূপরেখা নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে সংবিধানের বাইরে গিয়ে এ সরকার গঠন করতে হবে।
সংবিধানের ১২৩(৩)(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার পূর্বের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু বর্তমান অবস্থাকে ‘বিশেষ পরিস্থিতি’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে তার সময়সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে মত দেয়া হয়। সে ক্ষেত্রে সাধারণ নির্বাচনের পর গঠিত সংসদে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়া হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়সীমা তারা নিজেরাই নির্ধারণ করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আমরা এক্সট্রা অর্ডিনারি সিচুয়েশনে সরকার গঠন করছি। এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে বৈধতা দেয়ার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক রীতি অনুসরণ করা হবে। সরকারের মেয়াদ এখনো ঠিক করা হয়নি। এটি আলোচনা চলছে। ছাত্রদের প্রস্তাবক্রমে ড. ইউনূস আসার পর এটি চূড়ান্ত করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।