সকল মেনু

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা, সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায় রাজনৈতিক দলগুলো

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আর সন্দেহ দেখা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। ধোঁয়াশা কাটাতে তাই সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায় দলগুলো। নেতারা বলছেন, নির্বাচন এড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখার চেষ্টা চলছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হলে তারা আশ্বস্ত হতেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাব্বীর আহমেদের মতে, রোডম্যাপের দাবি যৌক্তিক-বাস্তবসম্মত। কেননা এর ওপরই নির্ভর করছে দল ও কমিশনের নির্বাচনী প্রস্তুতি।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। শুরুতে ৬ মাসের মধ্যে, কখনও যৌক্তিক সময় থেকে এক বছর; আর সবশেষ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটের দাবিতে অটল দলটি। দুই দফা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও আশ্বস্ত হতে পারেনি বিএনপি।

কেন বারবার নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিন-তারিখ চাইছে বিএনপি? এমন প্রশ্নে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলছেন, আমরা মনে করি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রদানের সাথে সাথে জনমনে স্বস্তির ভাব আসবে। সত্যিকারভাবে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলো আশ্বস্ত হতে পারবে কখন, কীভাবে নির্বাচনের জন্য আগাতে হবে। অনিশ্চিত পরিবেশে বিনিয়োগ-ব্যবসা হয় না। রাজনৈতিক অস্থিরতাও বিদ্যমান থাকে।

অন্যদিকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, পরস্পরের সম্মানবোধের বাইরে গিয়ে সাংঘর্ষিক রাজনীতির দিকে যাবে। সেই জায়গাটা কিন্তু স্বৈরাচারের দিকে উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন। গণতান্ত্রিক সম্মানের দিকে যতক্ষণ না যাবেন, স্বৈরাচারের জন্য জায়গা করে দিচ্ছেন।

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করা দলগুলোর নেতারাও মনে করেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে।

বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, রোডম্যাপের স্পষ্ট একটা ধারণা পাওয়া যেত তাহলে দ্বিধা-সন্দেহ কাজ করছে, সেটার অবসান হতো। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন নির্বাচন কমিশন। সরকার কমিশনকে তার একটা রাজনৈতিক নির্দেশনা দিতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলোর দিক থেকে রাজনৈতিক, সাংগঠনিক প্রস্তুতিটা তারা বিবেচনায় আনতে পারতেন।

তবে বিএনপি কিংবা অন্য দলগুলোর নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের দাবিকে যৌক্তিক মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ। তিনি বললেন, আমার কাছে এটা যৌক্তিক। কারণ তারা যেটার জন্য রাজনীতি করে, তারা সেটাই চাইছে। এর বাইরে তো কিছুই চাইছে না। তারা চাচ্ছে নির্বাচনটা সুনির্দিষ্টভাবে কবে হবে? একদম সুস্পষ্ট তারিখ জানতে চাচ্ছে। এটা যে শুধু দলের প্রস্তুতি না, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিরও ব্যাপার আছে। বারবার তারা বলছে, বিচারের তো বিরোধী না। আগে বিচার, পরে নির্বাচন— এটা তো সময় ক্ষেপণের কৌশল মাত্র।

উল্লেখ্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনের দুই মাস আগে ঘোষণা করা হবে রোডম্যাপ। কিন্তু সরকারের এই অবস্থানের সঙ্গে একমত নয় বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। তারা বলছে, রাজপথের চেয়ে আলোচনার টেবিলেই হোক সমাধান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top