সকল মেনু

প্রস্তুতি থাকলেও এখনই আন্দোলনে যেতে চায় না বিএনপি

বারবার জাতির সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২৬-এর জুনের সময়সীমা জানান দেয়ার মধ্যেই থমকে আছে তা।

ভোটের সময় নিয়ে দাবি জোরালো করলেও রোডম্যাপ ঘোষণা নিয়ে এখনই আন্দোলনে যেতে চায় না বিএনপি। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাংগঠনিক প্রস্তুতি আছে বলে জানান নেতারা। তারা মনে করছেন, তাদের দাবি উপেক্ষা করছে অন্তবর্তী সরকার। নির্বাচনের কথা বললেই বিএনপিকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা চলছে।

দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের দাবি কেবল একক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নয়, বরং বাদবাকি সকলেরই। অথচ একচোখা নীতি দেখিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সেই দাবি এড়িয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের কথা বললেই মনে হয় একটা প্রতিপক্ষের ভাবসাব, ভোট তো সারাদেশের মানুষের অধিকার। যারা দেশের মানুষকে তার মালিকানা থেকে বঞ্চিত করতে চায়, তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, তাদের যদি কোনও ষড়যন্ত্র থাকে, সেটা তো বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেন, সরকার চায় না যে বিএনপি ক্ষমতায় আসুক, তাদের পছন্দের দল হলো এনসিপি। এই দল যতদিন সাবালক না হবে, যতদিন আরও শক্তি বাড়বে না ততদিন পর্যন্ত নির্বাচন দেয়ার ইচ্ছা বর্তমান সরকারের নাই, সরকারপ্রধানের নাই। কিন্তু তারা যে নির্বাচন বিষয়ে মুখ বন্ধ রেখেছে এবং একটা দলকে প্যাট্রোনাইজ করে যাচ্ছে, কিংস পার্টি সৃষ্টি করেছে। এগুলো তো একটা খারাপ উদাহরণ।

এমন আচরণে বিএনপির ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটছে বলে জানান নেতারা। তবে কি নির্বাচনের দাবিতে আবারও রাজপথে আন্দোলন? সিনিয়র এই দুই নেতা বলছেন, এখনই আন্দোলন নয়। তবে, প্রয়োজনে ভোটাধিকার ফিরে পেতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন তারা।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেন, একটা বিশৃঙ্খলা হলে আবার সেটার সুযোগ নেবে পতিত স্বৈরশাসক। আমরা আরও কিছুদিন দেখতে চাই, তারা রোডম্যাপ ঘোষণা করে কি না। কিন্তু আমরা একটাপর্যায় পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কারও সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, এটা তো খুবই একটা অন্যায় ব্যাপার হয়ে যায়। বাংলাদেশের ভাবমূর্তির ব্যাপার আছে এখানে। বাংলাদেশ যদি এইভাবে চলতে থাকে… ক্রমান্বয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। সেটার জন্য তো মানুষ এত ত্যাগ স্বীকার করেন নাই। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে তাদের অধিকারের জন্য তো দাঁড়াবেই।

দল হিসেবে বিএনপির মনোবল বিগত সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। নির্বাচন কিংবা আন্দোলন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে বিএনপির সেই সাংগঠনিক প্রস্তুতি আছে বলেও জানান দায়িত্বশীলরা।

বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিনিয়ত সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখভাল করছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং সেই অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কাজও হচ্ছে। আমাদের প্রস্তুতি আছে আন্দোলন ও নির্বাচনের। বিএনপি জনবান্ধব রাজনৈতিক দল, যার শিকড় গ্রাম পর্যন্ত রয়েছে। সে কারণে কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত দেবে, তারা সেটা তাৎক্ষণিকভাবে পালন করতে প্রস্তুত থাকবে, অবশ্যই আছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, তাদেরই সমর্থনে গঠিত সরকারের বিরুদ্ধে, ভোটের দাবিতে রাজপথে নামা বিব্রতকর। প্রত্যাশা করছেন, নির্বাচনের গুরুত্ব অনুধাবন করে সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ ঘোষণা করবে অন্তবর্তী সরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top