সকল মেনু

ভৈরবে অফিস রুমে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে হেনস্তা করলো যুবলীগ নেতা আজিম রানা

ভৈরব( কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অফিস রুমে ঢুকে স্কুল শিক্ষককে হেনস্তা ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো: আজিম রানা ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে।
আজ ২৯জুন, রবিবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী পূর্বকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এসময় স্কুলের ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক এ কে এম মাসুদ ও দপ্তরি মিকাইল মিয়া হামলার শিকার হন।
খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে শিক্ষককে উদ্ধার করে।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মো: আজিম রানা ভুঁইয়া গজারিয়া ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও পূর্বকান্দা গ্রামের মো: এলাছ উদ্দিন ভুঁইয়ার পুত্র।
ভুক্তভোগী শিক্ষক এ কে এম মাসদ বলেন, বিগত দুই বছর ধরে আজিম রানা স্কুলে এসে উৎপাত করতো। বিভিন্ন সময়ে স্কুলের বেঞ্চ ও অন্যান্য জিনিসপত্র জোর করে নিয়ে যেত। প্রতিবাদ করলেই সে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি ও মারতে আসতো। এমন ঘটনা আরো আগেও ঘটেছে। তার ভয়ে চুপ থাকতে হয়। গত ছয় মাস আগেও স্কুল থেকে বেঞ্চ নিয়ে গেলে দপ্তরীকে সাথে নিয়ে তখন তার বাড়িতে গেলে গালাগালি করে হুমকি দেয়। গেলো ঈদের বন্ধের সময় সে কাউকে না জানিয়ে স্কুলের পানির ট্যাংক থেকে পাইপ লাগিয়ে পুকুরে পানি দেয়ায় পাম্প পুড়ে যায়। তাছাড়া সে একজন মাদক সেবনকারী ও মাদক কারবারি। প্রায় সময়ই দপ্তরির রুমে এসে জোর করে মাদক সেবন করতো। এসবে বাধা দিলে তার উগ্রতা বেড়ে যেতে। তার অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তার মায়ের কাছে বিচার দেয়ার জেরে আজ রবিবার দুপুরে স্কুলের অফিস রুমে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং একপর্যায়ে আমার শার্টের কলার ও গলায় চাপ দিয়ে ধরে মারধর করে। এসময় অন্যান্য শিক্ষকরা এসে অফিস রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ফোনে শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে জানালে তখন তিনি থানায় যোগাযোগ করে পুলিশ পাঠায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং সবকিছু নোট করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে তিনি শিক্ষা অফিসারের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষক।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আজিম রানা ভুঁইয়া মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আজিম রানা সে একজন মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাসহ বেশ কিছু মামলা রয়েছে। তার আরেক ভাই মাসুদ ভুঁইয়াকে কিছু দিন আগে ডাকাতির অভিযোগে থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে চালান দেয়। তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এঘটনার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি করেন শিক্ষকরা।

ভৈরব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.ছিদ্দিকুর রহমান জানান, স্কুল চলাকালীন সময়ে আজিম রানা অফিস রুমে ঢুকে প্রধান শিক্ষক একেএম মাসুদ রানাকে হেনস্তা ও মারধর করেছেন। এই ঘটনায় যুবকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক মো.ফরিদুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অফিস রুম থেকে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করি। তাকে লাঞ্ছিত ও মারধর করার সত্যতা পাওয়া যায়। এই ঘটনায় জড়িত যুবককে আটক করতে তার বাড়িতে গিয়ে পাইনি। এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top