সকল মেনু

আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে রণক্ষেত্র আড়াইহাজার, আহত ১৫

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পূর্ব বিরোধের জেরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র ব্যবহারসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এছাড়া বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভোর ৫টার  দিকে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের কাকাইলমোড়া এলাকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহ আলম ও একই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
 
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে কাকাইলমোড়া এলাকায় খাগকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি শাহ আলমের অনুসারী এবং ওই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া মিয়ার অনুসারী উপজেলা ওলামা দলের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। এতে উভয়পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এর জের ধরে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভোর পাঁচটার দিকে উভয়পক্ষের শতাধিক লোকজন দা, বটি, টেঁটা, বল্লম সহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।
 
সংঘর্ষের সময় পাঁচটি ককটেল নিক্ষেপ করা হলে এর মধ্যে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। দুটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের লোকজন একে অপরের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
 
সংঘর্ষে আছমা আক্তার (৪৭), গিয়াসউদ্দিন মিয়া (৪২) হাবিবুল্লাহ মিয়া (৫৫), পিয়ারিম (৪০), কামাল হোসেন (৩৪) সহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন বলে জানান তাদের স্বজনরা।
 
তারা জানান, আহতদের মধ্যে আছমা আক্তার (৪৭), গিয়াসউদ্দিন মিয়া (৪২) ও হাবিবুল্লাহ মিয়াকে (৫৫) গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত হাবিবুল্লার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকিদের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
 
এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যপারে এখনও কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী সময় সংবাদকে বলেন, ‘গত দেড় মাস আগে সেখানে একটি মারামারির মামলার বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোরেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এটা কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি সংক্রান্ত কোনো বিষয় নয়। সেখানকার স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির দুই গ্রুপের পূর্ব বিরোধের জেরে এই সংঘর্ষ হয়েছে।’
 
জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সংঘর্ষের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top