সকল মেনু

ভারতের সদিচ্ছা ছাড়া শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ সম্ভব নয়: বিশ্লেষক মত

২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় দুই দেশ একে অপরের কাছে অপরাধী এবং পলাতক আসামিদের হস্তান্তর করতে পারবে। তবে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ফেলা যাবে না এ চুক্তির বাধ্যবাধকতায়।

২০১৬ সালে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে চুক্তি সংশোধন করা হয়। বলা হয়, কারও নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেই তাকে প্রত্যর্পণ করা যাবে। এক্ষেত্রে অপরাধের প্রমাণস্বরূপ কোনও তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে হবে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। সংশোধিত চুক্তি অনুসারেই তাকে প্রত্যর্পণ করার কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার।

তবে রাজনৈতিক ব্যাক্তি হলেও শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত

বিশ্লেষকদের মতে, সে কারণেই রাজনৈতিক ব্যক্তির জন্য বিশেষ ধারা কার্যকর হবে না ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে। শুধু প্রয়োজন, দিল্লির রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চোধুরী বলেছেন, হত্যা, গুম, খুন— এগুলোকে রাজনৈতিক চরিত্র বলে আখ্যায়িত বা সংজ্ঞায়িত করা যাবে না। তার মানে রাজনৈতিক পরিচয় বা কারণের বাইরে কিন্তু গুম, খুন আছে।  সেই বিবেচানয় আমি মনে করি যে, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার যথেষ্ট যুক্তি বাংলাদেশের আছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহীদুজ্জামান বললেন, শেখ হাসিনার বেলায় ভারত এই চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে না। ভারত মনে করে যেহেতু সে একটা বৃহৎ শক্তি, তার প্রতি অনুগত ও তার স্বার্থ রক্ষাকারী যিনি রয়েছেন, তাকে রক্ষা বা তার জীবন রক্ষা করাটা ভারতীয় জাতীয় স্বার্থ।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরই শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দিল্লিকে চিঠি দিয়েছিল ঢাকা। তখন কোনও সাড়াই দেয়নি মোদি সরকার। রায় ঘোষণার পর ভারতের রাজনীতিবিদরা সংবাদমাধ্যমে বলছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না দিল্লি। যা অযাচিত মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অধ্যাপক এম শাহীদুজ্জামান বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোটা ভারতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হবে। যদি ভারতের সাথে গোপন যুক্তি থেকে থাকে, সেগুলো সম্পর্কে শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশ সরকারকে অবগত করে দেয় তাহলে ভারত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়বে।

মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চোধুরী বলেছেন, আমি মনে করি যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভারতীয় জনগণ যারা নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করবেন, তাদের উচিত তাদের সরকারের ওপরে চাপ সৃষ্টি করা। উনারা কি কোনও ব্যক্তিকে রক্ষা করতে যেয়ে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যে সম্পর্ক সেই সম্পর্ককে ক্ষতি করতে চান নাকি একজন ব্যক্তি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ?

ব্যাক্তি নয়, দুই প্রতিবেশি দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কই মুখ্য বলে জানান বিশ্লেষকরা। দিল্লির ইতিবাচক সাড়া পেলেই সম্ভব মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top