মুহাম্মদ এনামুল হক তালুকদার, নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই কলমাকান্দার নাজিরপুরে ভবানিপুর নামক স্থানে সংঘটিত হয়েছিল এক গৌরবোজ্জ্বল সম্মুখযুদ্ধ। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সেই লড়াইয়ে শহিদ হন সাতজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁদের আত্মত্যাগ স্মরণে কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শনিবার (২৬ জুলাই) পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস-২০২৫।
সকালে নাজিরপুর স্মৃতিসৌধে ও পরে লেংগুরায় শহিদদের সমাধিতে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ জনগণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।আয়োজিত হয় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা।
পরে লেংগুরা ফুলবাড়ি দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় এক বর্ণাঢ্য আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নেত্রকোণা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) সুখময় সরকার।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত।সভা পরিচালনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর বারী চাঁন মিয়া ও উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মো. তারিকুল ইসলাম।
আলোচনায় বক্তৃতা রাখেন, সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান তালুকদার, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম.এ খায়ের,
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতামেম ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভূঁইয়া, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল হাশেম,উপজেলা মহিলা দলের নেত্রী কলি আক্তার,কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. লুৎফর রহমান, লেংঙ্গুরা ইউপি বিএনপি’র সভাপতি হালিম হাওলাদার, উপজেলা এনসিপির নেতা আবু কাওসার উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম জহির, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইশতিয়াক হাসান সৌরভ, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম খোকন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মুশফিকুল হক তপু প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি রসদবাহী বাহিনীর গতিপথে অ্যাম্বুশ করে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর প্রত্যাবর্তনের সময় তারা পাক বাহিনীর মুখোমুখি হয়। সেখানেই সংঘটিত হয় নাজিরপুর সম্মুখযুদ্ধ।
এ যুদ্ধে শহিদ হন— ডা. আবদুল আজিজ (নেত্রকোণা), মো. ফজলুল হক (নেত্রকোণা),মো. ইয়ার মাহমুদ (মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ), ভবতোষ চন্দ্র দাস, মো. নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, মো. জামাল উদ্দিন (জামালপুর)। তাঁদের মরদেহ সীমান্ত সংলগ্ন ১১৭২ নম্বর পিলারের পাশে গণেশ্বরী নদীর পাড়ে সমাহিত করা হয়।
এ কর্মসূচিতে ময়মনসিংহ, মুক্তাগাছা, জামালপুর ও নেত্রকোণা জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার, উপজেলার বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।