২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির এক ভাষণ থেকে কয়েকটি আলাদা অংশ নিয়ে প্যানোরামা একত্রে সম্পাদনা করে। এই সম্পাদনা দেখে এমন ধারণা তৈরি হয় যে ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার ডাক দিয়েছেন। পরে বিবিসি স্বীকার করে—সম্পাদনাটি অনিচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়নি।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন,
‘সম্ভবত আগামী সপ্তাহে আমরা বিবিসির বিরুদ্ধে এক থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মামলা করবো।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে বিবিসি তার ভাষণের কথা ‘বদলে দিয়েছে’ এবং জানান, এই ঘটনার পর তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের সঙ্গে এখনো কথা বলেননি, তবে সপ্তাহান্তে তাকে ফোন করার পরিকল্পনা আছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় রাত পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বা ফ্লোরিডার কোনো আদালতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) প্রচারিত আরেক সাক্ষাৎকারে—যা এয়ার ফোর্স ওয়ানে দেয়া মন্তব্যের আগেই রেকর্ড করা হয়—ট্রাম্প বলেন, ‘বিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করা আমার দায়িত্ব। না করলে এ ধরনের ঘটনা অন্যদের সঙ্গেও ঘটতেই থাকবে।’
তিনি প্যানোরামার সম্পাদনাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে ঘিরে সিবিএস-এর ‘৬০ মিনিটস’ সাক্ষাৎকার বিতর্কের চেয়েও ‘খারাপ’ বলে মন্তব্য করেন। সেই ঘটনায় আইনি বিরোধ নিষ্পত্তিতে এ বছর জুলাইয়ে প্যারামাউন্ট গ্লোবাল ১.৬ কোটি ডলার পরিশোধে সম্মত হয়েছিল।
ট্রাম্পের ৬ জানুয়ারি ২০২১ সালের ভাষণে তিনি প্রথমে বলেছিলেন:
‘আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব, এবং আমাদের সাহসী সেনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের উৎসাহ দেব।’
প্রায় ৫০ মিনিট পর ভাষণের আরেক অংশে তিনি বলেন:
‘আমরা লড়ব। আমরা প্রাণপণ লড়াই করব।’
কিন্তু প্যানোরামার ডকুমেন্টারিতে দুই অংশকে পাশাপাশি রেখে দেখানো হয়:
‘আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব… আর আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। এবং আমরা লড়ব। প্রাণপণ লড়াই করব।’
মূলত, এই সংযুক্তি থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রকাশিত ‘সংশোধন ও স্পষ্টীকরণ’ নোটে বিবিসি স্বীকার করে যে তাদের সম্পাদনা ভুল বোঝার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এটি ভাষণের ধারাবাহিক অংশ নয়—বরং বিভিন্ন অংশ থেকে নেওয়া।
বিতর্কের চাপ বাড়তে থাকায় বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তা প্রধান ডেবোরাহ টার্নেস পদত্যাগ করেন।
এক বিবৃতিতে বিবিসি আরও জানায়, তাদের আইনজীবীরা বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।