Print

SomoyKontho.com

সুযোগ দিলে আমরাও টিকা উৎপাদন করবো

প্রকাশিত হয়েছে: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ৪:৪৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১, ৪:৪৭ অপরাহ্ণ

সময়কন্ঠ ডেস্ক

ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু সম্মেলনে গিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমাদের যে সাফল্য আমরা তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। আমরা নিজেরা ভ্যাকসিন তৈরি করতে চাই। ভ্যাকসিন তৈরিতে যে বাধাগুলো আছে, সেগুলো আপনাদের সরিয়ে দিতে হবে। এটা উন্মুক্ত করতে হবে। এটা জনগণের প্রাপ্য। এটা জনগণের সম্পদ হিসেবে দিতে হবে। যেন সারাবিশ্বের কোনো মানুষ এই ভ্যাকসিন থেকে দূরে না থাকতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের সুযোগ দিলে আমরাও ভ্যাকসিন উৎপাদন করবো। আমাদের সেই সক্ষমতা আছে। সেজন্য আমি জমিও কিনে রেখেছি। আমরা কিন্তু উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দ্য ফিল্ড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ প্রবর্তন করায় এর ওপর আনীত প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারা অনুযায়ী এ প্রস্তাব আনেন। প্রস্তাবে তিনি উল্লেখ করেন, সংসদের অভিমত এই যে, জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান-বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দ্য ফিল্ড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ প্রবর্তন করায় জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে ইউনেস্কোকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ হতে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানানো হোক।

এর আগে, সংসদে এর ওপর অনেক এমপি-মন্ত্রী আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহতদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলছিলেন। আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। পৃথিবীর কোনো দেশ স্বাধীনতার পর এত অল্প সময়ে এত স্বীকৃতি আদায় করতে পারেনি, যেটা বাংলাদেশ পেরেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আমাদের ছিল বলেই সেটা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, এ দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তির জন্য, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য, স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি যখন অর্থনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা দিলেন, দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচির ঘোষণা দিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে তাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হলো।এই হত্যাকাণ্ড শুধু রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু বা শেখ মুজিবকে না বরং, আমাদের পরিবার ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনকেও হত্যা করা হলো।’

তিনি বলেন, ‘ওদের মনে হয় একটাই চিন্তা ছিল। জাতির পিতাকে পরিবারসহ হত্যা করলে বাংলাদেশ যে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিল, বিজয়ী জাতি হিসেবে যেভাবে মাথা তুলে বিশ্ব দরবারে চলছিল, সেই জায়গাটা নষ্ট করা। স্বাধীনতার সুফল যেন বাংলাদেশের ঘরে না পৌঁছায়, স্বাধীনতা যেন ব্যর্থ হয়, ওই বিজয় যেন ব্যর্থ হয়, এটাই বোধহয় প্রচেষ্টা ছিল। যেটা আমরা দেখেছি ২১ বছর। সেভাবেই দেশ পরিচালনা করা হয়েছে। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষের যে উন্নয়ন করা যায় সেটা আজ আমরা প্রমাণ করেছি, প্রমাণ করতে পেরেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সব সময় উদ্যোগ রয়েছে। যেটা জাতির পিতা আমাদের সংবিধান দিয়েছেন। আমাদের চার মৌলিক নীতি দিয়েছেন। পাশাপাশি মানুষের মৌলিক অধিকারের কথাগুলো বলেছেন। বাংলার ভূমিহীন মানুষদের ঘর বাড়ি তৈরি করে দেওয়া, চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার ব্যবস্থা করা, শিক্ষাকে অবৈতনিক করা।’

তিনি বলেন, ‘একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। কোনো কারেন্সি নোট নেই। এ অবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করে প্রায় দেড় লক্ষাধিক সরকারি চাকরি দেওয়া, এমনকি যেসব পত্রপত্রিকায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যেগুলো তারা চালাতে পারছিল না। সেই সাংবাদিকদের পর্যন্ত সরকারি চাকরির মর্যাদা দিয়েছেন তিনি। প্রত্যেকটি শিল্প-কারখানা—মা যেমন সন্তানকে সেবা-শুশ্রূষা করে সুস্থ করে ঠিক সেভাবে প্রতিটি পাকিস্তানিদের পরিত্যক্ত কারখানাকে বা ফেলে দেয়া বা বন্ধ করে দেয়া কলকারখানাগুলো তিনি জাতীয়করণ করে চালু করেন।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশের প্রেক্ষাপটের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এসে দেখেছি বিজ্ঞান কেউ পড়ে না। বিজ্ঞানের ক্লাস হয় না। বিজ্ঞানের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। গবেষণা তো ছিলই না। এর জন্য বিশেষ বরাদ্দ ছিল না।’

৯৬ সালে আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু এখন আর পিছিয়ে নেই। আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশ জনগণকে। আমাদের তারা বারবার ভোট দিয়েছেন। সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি। এই এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে এখন আর বাংলাদেশের কাউকে বাইরে গিয়ে কথা শুনতে হয় না। ভালো কাজটা কেউ চোখে না দেখলে আমাদের কিছু বলার নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ইয়াং বাংলা স্টার্টআপ শুরু করেছি এবং এর জন্য কিছু বরাদ্দ দিয়েছে। আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ আমাদের কিছু ইয়াং সংসদ সদস্য সবাই কিন্তু এই প্রোগ্রাম নিয়েছে।’ অনলাইনের অভূতপূর্ব বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস একদিনে তো হয় না, ধাপে ধাপে করতে হয়।’

প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আব্দুল করিম
সম্পাদকীয় কার্যালয়: এস করিম ভবন, তৃতীয় তলা ৪৩, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট ঢাকা- ১২০৫
ফোন: 02 9356582, মোবাইল: 01715635623, ইমেইল: [email protected]